দুর্গাপুর, ৯ জুন: বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ভোটে দিলীপ ঘোষ কে পর্যুদস্ত করার পরেও দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে তেত্রিশ টি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের থেকে পিছিয়ে কির্তি আজাদ। আর তাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়াতে শোরগোল পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের চাঞ্চল্যকর পোস্টকে ঘিরে। সেই পোস্টে পোষ্টে দাবি করা হয়েছে, “”দলের ব্লক সভাপতি এবং ওয়ার্ড সভাপতিদের অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া হোক। কারণ সামনেই দুর্গাপুর পৌরসভার ভোট।””অন্যদিকে শনিবার দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংগঠনিক রদবদলের নির্দেশ দিয়েছেন।দুর্গাপুর শহরের তিনটি ব্লকের মোট ৪৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩ টি ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি।আর এই ফল দেখেই দুর্গাপুরের ব্লক সভাপতি ও ওয়ার্ড সভাপতিদের সরানোর দাবীতে শোরগোল পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সামনেই পুরসভা এবং তার পরেই ২০২৬ এ বিধানসভা নির্বাচন।তার আগে দলের সংগঠন ঢেলে সাজানো হবে বলেও সুত্র মারফত জানা গেছে।
কীর্তি আজাদের সহজ জয়ের পরেও দুর্গাপুর শহরে তৃণমূল কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুর্ভাবনায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। কারণ সামনেই দুর্গাপুর পৌরসভার ভোট। আর তার পরেই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। দুর্গাপুর পশ্চিম এবং দুর্গাপুর পূর্ব এই দুই বিধানসভার পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যাচ্ছে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ১২ হাজার ভোটে পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। অন্যদিকে দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের অন্তর্ভুক্ত দুর্গাপুর নগর নিগমের যে কটি ওয়ার্ড রয়েছে সেই সমস্ত ওয়ার্ডের মধ্যে কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোতে পরাজিত হতে হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। যদিও দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়েছে। দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের ব্যক্তিগত ক্যারিস্মা এবং তার সুমিষ্ট ব্যবহার ও কাজের মানুষ হিসাবে এগিয়ে আসা দুর্গাপুর পূর্বকেন্দ্রে কীর্তি আজাদের জয়ের পিছনে অন্যতম বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের ব্লক সভাপতি ওয়াড সভাপতিদের নিয়ে। এছাড়াও কাঁকসা ব্লকের নবনিযুক্ত সভাপতির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। দলীয় নেতারা অনেকেই “”ফেঁপে ফুলে “”উঠেছেন। দুর্গাপুর নগর নিগমের একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলর প্রমোটারির সাথে, পুকুর বুজিয়ে বড় বড় বিল্ডিং তৈরির সাথে, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও রাজ্য সরকারের খালি আবাসন গুলি মোটা টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ, সরকারি উৎসব ভবনগুলিতে কাটমানি খাওয়া এমন সব অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পড়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব সেই বিষয়গুলিতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। তার মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়াতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এখন দেখার সামনের পুরসভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের যে সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে গেরুয়া শিবিরের কাছে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর, সেই সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে প্রাক্তন কাউন্সিলরদের ওপরে ভরসা রাখেন? নাকি সেই ওয়ার্ড গুলিতে নতুন করে ঘুঁটি সাজাবেন তৃণমূল নেতৃত্ব?