দুর্গাপুর,২৮ সেপ্টেম্বর : পূর্ব বর্ধমান থেকে সড়কপথে দুর্গাপুর ঘেঁষা বাঁকুড়ার বড়জোড়ার সীতারামপুর এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষদেরকে ত্রাণ দিতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সেদিন রাত্রি বাস করেন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে সার্কিট হাউসে। পরদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলার বোলপুরে রওনা দেওয়ার আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বে সামনে আসানসোল ও দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বর এর বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে শ্রমিক সংগঠন সম্পর্কে inttuc এর জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটককে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত সমস্ত সমস্যার সমাধানের কড়া বার্তা দিয়ে যান বলে সূত্র মারফত জানা যায়। দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি ওয়ার্ডে বর্ধমান -দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজয়ী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ পিছিয়ে ছিলেন। শহর দুর্গাপুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ স্পষ্ট করে দিয়ে যান দলীয় নেতাদের সামনে। দুর্গা পুজোর পরেই কি তাহলে শিল্প শহর দুর্গাপুরের বিভিন্ন শিল্প-কল-কারখানাগুলিতে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন
আইএনটিটিইউসির ইউনিট কমিটিগুলির বদল ঘটতে চলেছে? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কি দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতার নামে অভিযোগ জমা পড়েছে? সূত্র মারফত আরও জানা গেছে যে দুর্গাপুরের শ্রমিক শ্রেণীর এক প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ঠিকাদারদের সাথে “”গোপন আঁতাত””করে এই প্রবীণ নেতা সাধারণ ঠিকা কর্মীদের বঞ্চিত করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।ঠিকা কর্মীদের বেতন বাড়ার পরেও তাদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে না কেন? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শুধু তাই নয় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ভেতরে ঠিকা কর্মীরা এক দম বন্ধ পরিবেশে মুখ বুঝে সমস্ত অন্যায় অবিচার সহ্য করেও কাজ করছে শুধুমাত্র প্রতিবাদ করলে কাজ হারাবেন এই ভয়ে এমন অভিযোগও কি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা পড়েছে? এক সময় বলা হয়েছিল কারখানা থেকে চার কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার বসবাসকারী বেকার যুবকদের সেই কারখানায় ঠিকা কর্মী হিসাবে যোগদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু তা না দেওয়ার কারণে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সংলগ্ন শুধুমাত্র ১২,১৪ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া প্রায় সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে গত লোকসভা নির্বাচনের শাসকদলের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী কি তাহলে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় যখন প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে তখন এই কারখানার শাসক দলের ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের যে কমিটি রয়েছে তাতে বদল ঘটানোর বার্তা দিয়ে গেলেন? সূত্র মারফর জানা গেছে দুর্গা পুজোর পরেই দুর্গাপুরে আইএনটিটিইউসির বিভিন্ন কারখানার ইউনিট কমিটিগুলিকে ভেঙ্গে দিয়ে আবার নতুন করে সেই কমিটিগুলিকে গঠন করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং অভিজিৎ ঘটককে যৌথভাবে। ২০২৬ সালের ফের বিধানসভা নির্বাচন। দুর্গাপুরের দুটি আসনের মধ্যে একটি আসনে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জয়লাভ করলেও দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রটি হাতছাড়া হয়েছে শাসকদলের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন তার অত্যন্ত প্রিয় দুর্গাপুরের দুটি আসনে শাসক দলের প্রার্থীদের জয় আগামী বিধানসভা নির্বাচনে। আর সেই লক্ষ্যই মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিক নগরী দূর্গাপুরে নিজের দলের শ্রমিক সংগঠনের হাল ফেরাতে এবার কড়া ভূমিকা নিতে চলেছেন। যে সমস্ত শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলে সেই সমস্ত মুখ সামনে রেখে কোনওভাবেই কারখানার ইউনিটগুলিকে আর চালানো যাবেনা এমন নির্দেশও মুখ্যমন্ত্রী দিয়ে গেছেন নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে বলেও এর সূত্র মারফত জানা গেছে। এখন দেখার দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে দাঁড়িয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার সেনাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে শ্রমিক নগরী দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠন INTTUC র হাল ফেরাতে যে কড়া দাওয়াই দিয়ে গেলেন তা কত দ্রুত কার্যকরী হয়?