দুর্গাপুর, ২৮ এপ্রিল : বিগত বাম জমানায় দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের এক ক্লাবের সাথে অন্য ক্লাবের সংঘাতের কালো ইতিহাস স্টিল টাউনশিপের মনের মাঝে আজও জীবিত। বাম নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ক্লাব গুলির দ্বন্দ্ব জিইয়ে ছিল।মাঝে কয়েকটা বছর সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আবারও আপাতত শান্ত নিরীহ দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপ বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। কখনো দেওয়াল লিখন কে কেন্দ্র করে বিজেপি বনাম তৃণমূল সমর্থকদের সংঘর্ষ,কখনো ব্যানার পোস্টার লাগানো কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ।
শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দুর্গাপুরের বি-জোন নিউটন এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রইল। আর পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাত পর্যন্ত দুর্গাপুর থানার পুলিশ বাহিনীকে হিমশিম খেতে হল। অভিযোগ রকি ওরফে অভিষেক রায় তার দলবল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে শনিবার দুর্গাপুরের মায়াবাজারে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হলো দুর্গাপুরের বি-জোন এলাকায়। অভিযোগ নিউটন এলাকা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বান্টি সিং এর নেতৃত্বে বিদ্যাসাগর এভিনিতে বিজেপির কার্যালয়ে সংঘ পরিবারের একটি বৈঠক চলাকালীন সেখানে ইঁট পাটকেল ছড়া হয়। বিজেপির যুব নেতা পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “”বান্টি সিংদের নেতৃত্বে দুর্গাপুরের বি-জোন এলাকায় অরাজকতা চলছে। আজ আমরা যখন বৈঠক করছিলাম তখন বান্টি সিং এর নেতৃত্বে ইঁট পাটকেল ছোড়া হয়। আমরাও চুপ ছিলাম না। আমরা পাল্টা পাথর ছুড়তে শুরু করি। ইঁটের আঘাতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশকে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। “”অন্যদিকে বান্টি সিং এর অভিযোগ, “”পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় নেশাগ্রস্ত একজন যুবক। আমরা যখন এলাকায় ছিলাম না সেই সময় পারিজাত ও তার কয়েকজন সঙ্গী নিউটনে আমাদের ক্লাবে ইঁট পাটকেল ছোড়ে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। আমাদের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর শিখিয়েছেন মানুষের জন্য কাজ করার কথা। আমাদের সঙ্গে যারা জমায়েত হয়েছেন তারা মারপিট করার জন্য নয়, মানুষের জন্য কাজ করার চিন্তাভাবনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক হিসেবে কাজ করছেন। আমাদের নেত্রী শিখিয়েছেন বদলা নয়, বদল চাই। “”দুই পক্ষের অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। বি-জোন বিদ্যাসাগর এভিনিউ এর সারা রাস্তায় ইঁটের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সকে দেখা যায় শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে। দুপক্ষই এই বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের কথা জানায়। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দুই পক্ষই জমায়েত করে থাকে এলাকায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার দু পক্ষ কে সরানোর চেষ্টা করা হলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় দুই পক্ষই। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই উত্তপ্ত হচ্ছে দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপ। কয়েকদিন আগে আসিস মার্কেটে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের চার চক্রের আগের রাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। তার আগে স্টিল টাউনশিপের বিভিন্ন জায়গায় দেওয়াল লিখন কে কেন্দ্র করেও দুই পক্ষের বাদানুবাদ দেখা গিয়েছিল। দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপে শান্তিপূর্ণ ভোট করানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালো প্রশাসনের কাছে।