জটিল রোগ নির্মূল হয়েছিল রাজা বল্লাল সেনের! শিবরাত্রিতে আজও ভিড় জমে অলৌকিক রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরে….

দুর্গাপুর, ৮ মার্চ: কথিত আছে, রাজা বল্লাল সেনের জটিল রোগ নির্মূল হয়েছিল রাঢ়েশ্বর শিবমন্দির স্থাপন করে। আজও অলৌকিক সেই মন্দিরে ভিড় জমে শিবরাত্রির সন্ধিক্ষণে। অগাধ ভক্তি আর মনের আস্থা নিয়ে শিবলিঙ্গে জল ঢাললে মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলেও অনেকের মত। রাজা বল্লাল সেনের রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরে আজও শিবরাত্রিতে উপচে পড়ে ভিড়। ইতিহাস বলছে প্রায় ৮০০ বছর আগে গড় জঙ্গলে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন রাজা বল্লাল সেন। কাঁকসার মলানদিঘি, বনকাটি সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মাঝে গড় জঙ্গলে অজয়ের পাড়ে আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছিলেন। দুষ্কৃতীদের দমন করতে গঠন করেছিলেন সৈন্যদলও। আর সেই সময়ই এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন রাজা বল্লাল সেন। কবিরাজরাও ব্যর্থ হয়েছিলেন সেই রোগ নির্মূল করতে। তখনই তিনি দেবাদিদেব মহাদেবের স্বপ্নাদেশে পান আড়ার কালদিঘি পুকুরের পাশে রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির তৈরি করার। কথিত আছে সেই কালদিঘি পুকুরে দেবাদিদেব মহাদেব স্নান করতেন। ওই পুকুরের পাশে পূর্ব ভারতের বেলে ও ঝামা পাথর দিয়ে তৈরি করা হয় রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরটি। সেই মন্দিরের ভেতর শিবলিঙ্গ রেখে দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা শুরু করেন রাজা বল্লাল সেন। অলৌকিকভাবে তাঁর জটিল রোগও নির্মূল হয়ে যায়।

তখন থেকেই প্রতিদিন হয়ে আসে নিত্যপুজো। বিশেষ বিশেষ সন্ধিক্ষণে হয় পুজোপাঠ। শিব রাত্রির সন্ধিক্ষণে সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই চলছে পুজোপাঠ। শিবের মাথায় জল ঢেলে অনেকে মানত করছেন। সেই ভক্তদের জন্য দুপুরে রয়েছে অন্নকুটের ব্যবস্থা। মন্দিরের সেবাইত দ্বীপায়ন চক্রবর্তী বলেন,”তাঁরা বাপ ঠাকুরদার মুখে শুনেছেন অলৌকিক এই মন্দিরে রয়েছে নানান অলৌকিক কাহিনী। মনের ভক্তি আর অগাধ আস্থা রেখে যদি কেউ পুজো দেন তাহলে মনস্কামনা পূরণ করেন বাবা। প্রচুর ভক্তের ভিড় হয় বিশেষ বিশেষ সন্ধিক্ষণে। আর প্রতিদিনই হয় নিত্য পুজো।বর্তমানে স্মৃতি বিজড়িত মন্দির পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনস্থ। ভক্তদের যাতে সমস্যা না হয় সেদিকেও নজরদারি চালায় পুলিশের পাশাপাশি মন্দির কমিটি।” সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন হয়েছে এলাকার। গড়ে উঠেছে বহু অট্টালিকা বেড়েছে জনসংখ্যা। সেই ভিড়ের মাঝে আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে সেন আমলের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে বল্লাল সেনের সেই মন্দির। আর সেই মন্দিরে আজও ভিড় জমান রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তরা। ইতিহাসের সন্ধান পেতে পৌঁছান পুরাতত্ত্ববিদরাও।

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজ হান্ট অফিসের ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ