শ্রমিকনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের পালটা অভিযোগ অনুগামীদের

দুর্গাপুর, ১৭ মার্চ: দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে দুর্গাপুর থানায়। প্রভাতবাবুর নামে দুর্গাপুর থানায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এক ঠিকা কর্মী আমরাই গ্রামের বাসিন্দা সেখ লোকমান আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। এই অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় হয়েছে দুর্গাপুর। এবার ভিত্তিহীন অভিযোগ করে সঠিক তদন্তের দাবি করে পাল্টা দুর্গাপুর থানার ওয়ারিয়া ফাঁড়িতে স্মারকলিপি প্রদান দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের অন্যান্য কয়েকজন পদাধিকারী এবং প্রভাতবাবুর অনুগামীদের। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সদস্য শেখ আমিনুর রহমানের দাবি,”ঠিকঠাক কাজ না করার জন্য ইস্পাত কারখানার তরফ থেকে চিঠি দেওয়া হয় লোকমানকে।

তারপরেই লোকমান প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আসে। বিষয়টি জানাই। প্রভাত দা ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলেন। ম্যানেজমেন্টও চেষ্টা করে দেখছি বলেন। তারই মধ্যে শেখ লোকমান দাদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। সুপরিকল্পিতভাবেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্তের জন্য ওয়ারিয়া ফাঁড়িতে স্মারকলিপি প্রদান করেছি।” অন্যদিনে এই ইস্যুতে সুর চড়াতে শোনা গেল দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইকে। সমালোচনা করে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপির বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন,”বিজেপি এর আগেও অভিযোগ করেছে কিভাবে টাকা দিয়ে চাকরি দেয় শাসকদলের একাংশ। আজ সেটাই প্রমাণিত হলো। সঠিক তদন্ত হলেই বেরিয়ে আসবে কতজন নেতা জড়িত। আর কিভাবে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কারণ ভাগের টাকা পৌঁছে যায় প্রদেশ নেতাদের কাছে।””সরগরম শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক বাতাবরণ। ২০১১ সালের রাজনৈতিক পালা বদলের পর প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সহ দুর্গাপুর মহকুমার প্রায় সমস্ত কলকারখানা গুলিতে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির ইউনিট কমিটিগুলি গঠিত হয়েছিল। উল্লেখ্য এর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে দলনেত্রীর তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় কে কলকারখানায় শ্রমিক সংগঠন দেখভাল যাতে আর না করেন তানিয়া কড়া ওয়ার্নিং দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও প্রবাদ চট্টোপাধ্যায় স্ব-মূর্তিতে, স্ব-পদে বহাল ছিলেন।যা দেখে ঘরে বাইরে সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের সবচেয়ে বড় বিশ্বস্ত অনুগামীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ভুরিভুরি অভিযোগে তাদেরকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ইউনিট কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল অথচ প্রশ্ন উঠেছিল যার নেতৃত্বে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ইউনিট কমিটি চলত সেই প্রভাত বাবুকেই বা কিভাবে ফের একবার কারখানার দায়িত্ব রেখে দেওয়া হল? তবে প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আমরাই গ্রামের ঠিকা কর্মী সেখ লোকমানের করা অভিযোগ নিয়ে শাসকদল দ্বিধাবিভক্ত। তা নাহলে প্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের বিরুদ্ধাচারণ করতে যখন আমিনুর রহমান,আবু সঈদ দের দেখা গেল, তখন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ঘাসফুল শিবিরের ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের আরও বড় বড় নামের নেতারা কেন আমিনুর রহমানদের সঙ্গে ছিলনা?

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *