দুর্গাপুর, ১৪ জানুয়ারি : ‘স্মর গরল খন্ডনম,মম শিরসি মন্ডনম,দেহি পদ পল্লব মুদারাম’ কবি জয়দেবের গীতগোবিন্দমের শেষ লাইনটি লিখেছিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ। কথিত আছে পৌষ মাসের সংক্রান্তির ভোরে দ্বাদশ শতকের কবি জয়দেব অজয়ের জলে দর্শন পেয়েছিলেন মা গঙ্গার। তারপর থেকেই পূর্ণ লাভের আশায় প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির পূর্ণ লগ্নে অজয়ের জলে পূর্ণস্থানের আশায় দেশ-বিদেশের পূর্ণার্থীদের আগমন ঘটে। তিন দিন ধরে চলে মেলা। আড়াইশো আখড়ায় বসে বাউল আর হরিনামের আসর। মঙ্গলবার ভোর থেকে কনকনে শীতও ফ্লপ পুণ্যার্থীদের ডুবের কাছে। ডুব দিয়েই জয়দেব কেন্দুলীতে রাধা বিনোদের মন্দিরে পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন।

বীরভূম জেলা পুলিশ ও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ বাহিনী মুড়ে ফেলেছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায়। তৈরি করা হয়েছে বহু ওয়াচ টাওয়ার। সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে চলছে নজরদারি। জলপথে নজরদারি চালাচ্ছে দ্রুত উদ্ধারকারী দল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রেকর্ড ভিড় হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করছে দুই পাড়ের মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে পূর্ণতীর্থভূমি অজয়ের দুই পার ভেসে উঠলো একেবারেই মিলনমেলায়।মূলত জয়দেব মেলার আরো একটি বিশেষত্ব যে গ্রামীণ মানুষেরা তাদের শিল্পকর্ম নিয়ে এই মেলায় এসে হাজির হন। গৃহস্থের নিত্য দিন কাজে লাগে এমন সব সামগ্রী এই মেলাতে বিক্রির উদ্দেশ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। আখড়াতে আখড়াতে চলে খাওয়া-দাওয়ার বিরাট আয়োজন। কীর্তন, বাউল ও লোকগীতির জমাটি আসর আজও জয়দেবের মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।সব মিলিয়ে আজও জয়দেব মানুষের মেলা,মিলন মেলা।।