বাঁকুড়া, ২৮ ডিসেম্বর : গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যখন পুরুলিয়ায় বন দফতরকে কার্যত ঘোল খাইয়ে বাঁকুড়া জেলার মুকুটমনিপুরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বাঘিনি জিনাত তখন বাঁকুড়ায় দলমার দাঁতাল দলও ছড়াল আতঙ্ক। দলমা থেকে খাবারের খোঁজে বাঁকুড়ায় আসা প্রায় ৬২ টি হাতির এখন ঠিকানা বড়জোড়ার পাবয়ার জঙ্গল। বন দফতর ওই জঙ্গলের মধ্যেই হাতির দলের গতিবিধি সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও আতঙ্ক কাটছে না এলাকার মানুষের। বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। পশ্চিমের জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম। এই তিন জেলাই আপাতত বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। বন কর্মীদের বারংবার ঘোল খাইয়ে ওড়িশার সিমলিপাল থেকে পালিয়ে আসা বাঘিনি জিনাত পুরুলিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাকে ধরতে নাকাল হচ্ছে বন দফতর। বারংবার বন কর্মীদের পরিকল্পনা ব্যার্থ করে কখনো পাহাড়ি জঙ্গলে আবার কখনো লোকালয় লাগোয়া জঙ্গলে ঘাপটি মেরে বসে থাকছে সে। পুরুলিয়ায় যখন এমন অবস্থা তখন স্বস্তিতে নেই বাঁকুড়া বন দফতর। বাঁকুড়ায় চিন্তার কারন হাতির দল। সপ্তাহ দুই আগে দলমা থেকে আসা ৬২ টি হাতির দল পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়ে বাঁকুড়া জেলায়।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, জয়পুর ও সোনামুখীর জঙ্গল পেরিয়ে হাতির দল সটান হাজির হয় বড়জোড়ার পাবয়ার জঙ্গলে। আপাতত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেখানেই রয়েছে হাতির দলটি। পাবয়ার জঙ্গলের মধ্যেই হাতির দলটির গতিবিধি সীমাবদ্ধ রেখে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানীর ঘটনা এড়াতে লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর। কিন্তু দল হাতির পাশাপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে রেসিডেন্সিয়াল দলছুট দাঁতাল। একদিকে বিভিন্ন জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়ানো রেসিডেন্সিয়াল দলছুট সেই দাঁতাল এবং অন্যদিকে ৬২ টি হাতির দলের আতঙ্কে এখন কাঁটা হয়ে রয়েছে বাঁকুড়া জেলার উত্তরাংশের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। হাতির দলকে নিয়ে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে বন কর্তাদের কপালেও। হাতির দলকে নিয়ে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। বিরোধীদের দাবী সরকার ও বন দফতরের সদিচ্ছার অভাবেই সাধারণ মানুষ আজ এমন সমস্যায় পড়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে শাসক দলের দাবী বন দফতর ও সরকারের চেষ্টার ত্রুটি নেই।