দুর্গাপুর, ১৫ ফেব্রুয়ারী : কয়েকদিন আগে দুর্গাপুরের বেনাচিতির বাসিন্দা ৭১ বছরের প্রৌঢ় নৃপেন্দ্রনাথ শ্যাম ভর্তি হয়েছিলেন দুর্গাপুরের বিধাননগর পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দুদিন আগে দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার দেশবন্ধু নগরের কনক মজুমদারও (৬৫ বছর) ভর্তি হযন ওই বেসরকারি হাসপাতালেই। বুধবার রাতে ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় দুজনেরই। বৃহস্পতিবার সকালে বেনাচিতির বাসিন্দা মৃত নৃপেন্দ্রনাথ শ্যামের দেহ নিয়ে যায় পরিবার-পরিজনের। পাড়ার ক্লাবে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। ঠিক তখনই মৃতদেহের মুখ ভালো দেখতেই হতবাক হয়ে ওঠেন ব্বেনাচিতির বাসিন্দা মৃত প্রৌঢ়ের পরিবার-পরিজনের ও এলাকাবাসীর। তারা দেখেন নৃপেন্দ্রনাথ বাবুর দেহের বদলে এক মহিলার মৃতদেহ রয়েছে।মহিলার দুই কানে ছিদ্র।তড়িঘড়ি স্বর্গরথে করেই হাসপাতালে সেই মৃতদেহ নিয়ে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। অন্যদিকে মৃতা প্রৌঢ়া কনক মজুমদারের পরিবারের লোকজন সেই কথা জানতে পেরে হাসপাতালের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রানু পান অভিযোগ করেন,”তাঁর পিসি বুধবার রাতে এই হাসপাতালে মারা যান। তারা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেহ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। এরই মধ্যে খবর পান তাঁর পিসির দেহ বদলে গিয়েছে। নিজের মা বাবার সাথে এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহের জায়গায় তাঁর পিসির মৃতদেহ চলে গিয়েছে। হাসপাতালে চূড়ান্ত গাফিলতি ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না বলেও অভিযোগ তোলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।” পুরো অভিযোগ স্বীকার করে হাসপাতালের কর্ণধার পঙ্কজ মুখার্জী বলেন,”মৃতদেহ সনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল। মর্গের দায়িত্ব থাকা কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেও নজরদারি বাড়াবেন বলেও জানান ওই হাসপাতালের কর্নধার ।দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের মৃতদেহ পরিবারের হাতে ছাড়পত্র দেওয়ার কাজে নিযুক্তদের এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা দেখে হতবাক অনেকেই। আবার অনেকেই বলতে থাকেন পরিবারের লোকেরাই বা কেমন যে তারাও না দেখে মৃতদেহ নিয়েই রওনা দিলেন। সব মিলিয়ে মৃতদেহ বদলের বিভ্রাটের জেরে বৃহস্পতিবার সকালেই মুখরোচক আলোচনা শুরু হয়ে যায় শহরজুড়ে।।