পৌরসভার জলাশয়ের জলে বিষ মেশানোর অভিযোগ, প্রচুর মাছসহ জলজ প্রাণীর মৃত্যু, রাজনৈতিক তর্জা

দুর্গাপুর, ১৩ জানুয়ারি : দুর্গাপুর নগর নিগমের জলাশয় থেকে ভেসে উঠল মাছ। হৈ-চৈ পড়ে গেল এলাকায়। জলাশয়ে বিষ মিশিয়ে মাছ মারার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে। এটাই তো তৃণমূলের কালচার কটাক্ষে বিরোধীরা। দুর্গাপুর নগর নিগমের ১৭নং ওয়ার্ডের জলখাবার গলিতে রয়েছে দুর্গাপুর নগর নিগমের জলাশয়। সেই জলাশয় লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছিল দুর্গাপুরের দুই নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস। সদ্য শেষ হয়েছে সময়সীমা। তার আগেই বেশিরভাগ মাছ ধরে বিক্রিও করেছেন তিনি। তবে সেই জলাশয়ে রয়ে গেছিল তেলাপিয়া, রুই, কাতলা সহ একাধিক মাছ। সদ্য আগামী এক বছরের জন্য এই জলাশয়ের লিজ পেয়েছেন দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী ভোলা ভগত। আর সোমবার সাত সকালেই সেই জলাশয়ের অবশিষ্ট মাছ ভেসে উঠতে দেখল এলাকাবাসীরা। খবর জানাজানি হতেই পড়ে গেল হৈ-চৈ। খবর দেওয়া হল দুর্গাপুর নগর নিগমেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, জলাশয়ের লিজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ মিশিয়েছে ব্লকের সহ সভাপতিই। আর মাশুল গুনতে হচ্ছে গোটা এলাকাবাসীকে। পুকুরে নামা এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি এত মাছ মরেছে গোটা এলাকায় দুর্গন্ধে টেকাও যাচ্ছেনা। স্থানীয় মহিলা রিনা অধিকারীর অভিযোগ,”এই জলাশয়ে বিষ মিশিয়েছে বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি এতদিন এই পুকুরের দায়িত্বে ছিলেন। তবে এই বিষ মেশানোর জেরে আমরা এখন চরম আতঙ্কে। বেশ কিছু সাপেরও মৃত্যু হয়েছে। জলে নামলে তো আমাদের শরীরেও নানান রোগ দেখা দিতে পারে। আমরা চাইছি দ্রুত এই জলাশয়টি পরিষ্কার করা হোক। যে বিষ মিশিয়েছে তার বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

” সদ্য লিজ পাওয়া দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী ভোলা ভকতের দাবি করেন,”কে বিষ মিশিয়েছে? সেটা আমি সঠিক বলতে পারব না। একদিকে মাছ যেমন মরেছে তেমনি সাপ, ব্যাঙের মৃত্যু হয়েছে।তবে যেই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক না কেন তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” যদিও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাবি করে দু’নম্বর ব্লক এর তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বলেন,”এসব মিথ্যা অভিযোগ। কোন বিষ মেশানো হয়নি। এলাকার দোকান থেকে নোংরা জল পড়ে সেই কারণেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। পুকুরে বিষ মেশানো হয়েছে কিনা যারা অভিযোগ করছে তারা প্রমাণ করুক।” দুর্গাপুর নগর নিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ভট্টাচার্য বলেন,”অভিযোগ পেয়ে আমরা জলাশয় চতুর্দিক ঘুরে দেখলাম। কি কারনে মাছের মৃত্যু হয়েছে সেই নিয়েও আমাদের তদন্ত শুরু হয়েছে।”দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ ,”এটাই বাংলার আসল পরিচয়। কাটমানি না পেলেই তৃণমূলের নেতারা এইরকম ভাবেই সবকিছু নষ্ট করে ফেলে। এইভাবে জলাশয়ে বিষ মিশিয়ে মাছ মারা ঠিক হয়নি।”

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজ হান্ট অফিসের ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ