দুর্গাপুর, ৩ জুন: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বাড়িতে নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পরিচারিকার কাজ করতেন মহিলা। মহিলাকে কখনও ভয়, কখনও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার আবার কখনও মহিলার শরীর অসুস্থ হলে ওই নাবালিকা একাই পরিচারিকার কাজ করতে গেলে লাগাতার শারীরিক নির্যাতনের সাথে ধর্ষণের শিকার বলে অভিযোগ । আর মা-বাবাকে বিষয়টি জানালে খুনেরও হুমকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ।ওই শিক্ষক তৃণমূলের সাথেও জড়িত বলেও গুরুতর অভিযোগ। এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক শোরগোল নিউ টাউনশিপ থানার এমএএমসি এলাকায়। গ্রেফতার এলাকারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষক সুশান্ত পন্ডিত। অভিযুক্ত সুশান্ত পন্ডিত দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। সোমবার পুলিশি হেফাজত চেয়ে ধৃতকে তোলা হয় মহকুমা আদালতে। নির্যাতিতা নাবালিকার মায়ের অভিযোগ,”আমরা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। এলাকার প্রাথমিক শিক্ষক সুশান্ত পন্ডিতের বাড়িতেও মেয়েকে নিয়ে পরিচারিকার কাজ করতে যেতাম। আমার কয়েকদিন শরীর খারাপ হয়েছিল। আমি যেতে না পারলে মেয়েকে পাঠানোর কথা জানাতো সুশান্ত পন্ডিত। না পাঠালে মজুরি কেটে নেওয়াও কথা বলতেন। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েই যেত পরিচারিকার কাজ করতে। আর সেই সুযোগেই মেয়ের উপর লাগাতার ধর্ষণ করে শিক্ষক সুশান্ত পন্ডিত। মেয়েকে হুমকি দিয়েও বলতো যদি মা-বাবাকে বিষয়টি জানিয়েছিস তাহলে মেরে ফেলবো। কয়েকদিন আগে মেয়ের প্রচন্ড পেটে ব্যথা হলে ও তার পিসিকে বিষয়টি জানায়। তারপর আমরা জানতে পারা মাত্রই দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। চিকিৎসার পরেই বোঝা যায় মেয়ে গর্ববতী। আমরা কি করব ভেবে না পেয়ে দুর্গাপুরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী পুরমাতা লাভলী রায়ের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করে বলেন নিউটাউনশিপ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে। তারপরেই আমরা রবিবার নিউ টাউনশিপ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সেই জন্য এই শিক্ষকের কঠোর শাস্তি চাইছি আমরা।” দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী পুরমাতা লাভলি রায় বলেন,”এই ধরনের ঘটনা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আমি বিষয়টি জানতে পেরেই নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক সুশান্ত পণ্ডিতকে গ্রেফতার করেছে। দলের তরফ থেকেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক সুশান্ত পন্ডিতের দাবি,”পুরো অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি কোন দলের সাথেও যুক্ত নন।”বিজেপি বিধারক লক্ষন ঘোড়ুই ও সিপিএমের নেতা পঙ্কজ রায় সরকার এই ঘটনাকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসকদকের কঠোর সমালোচনা করেন।।এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরে।।