পঞ্চায়েতের মেলাতে অনুপস্থিত খোদ পঞ্চায়েত প্রধান!!

কাঁকসা, ৫ ফেব্রুয়ারী: পঞ্চায়েতের মেলায় ‘ব্রাত্য’ হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে মেলা দখলের হুমকির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন খোদ প্রধান। নিজেদের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই সমালোচনায় বিরোধীরা। ভিত্তিহীন অভিযোগ পাল্টা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। কাঁকসার মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঢ়েশ্বর শিব মন্দিরের মাকুড়ি সপ্তমীর মেলা কে পরিচালনা করবে সেই নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে পঞ্চায়েত সমিতি আর গ্রাম পঞ্চায়েতের চলছিল চাপা দ্বন্দ্ব। মেলার উদ্বোধনের দিনই সেই দ্বন্দ্ব চলে এলো একেবারে প্রকাশ্যে।

মঙ্গলবার বিকেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য সহ দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহা, কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নবকুমার সামন্ত ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতি থাকলেও দেখা গেল না মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের খোদ প্রধান পাকুমনি সোরেনকে। যাকে ঘিরেই দানা বাঁধলো বিতর্ক। প্রধানের অভিযোগ,”গত বছর পর্যন্ত মেলা পরিচালনা করে এসেছে মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েত। এই বছর মেলা পরিচালনা নিয়ে পঞ্চায়েতে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য মেলা পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে নিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তারপরেও একাধিকবার আমি বৈঠক করতে চেয়েছি মেলার পরিচালনা নিয়ে, কিন্তু কেউ আসেনি আমার পাশে। পঞ্চায়েত সমিতি যে মেলা পরিচালনা করবে, সেই নিয়েও বিডিও কোন চিঠি আমাকে দেয়নি। আমি শুনছি যে মেলার উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্রে আমার নাম রয়েছে। কিন্তু আমাকে কেউ ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানায়নি। মেলার জায়গা তো আমার পঞ্চায়েত এলাকায়। তাহলে কার অনুমতিতে এই মেলা হচ্ছে সেটাও জানি না। অথচ মেলা হচ্ছে পঞ্চায়েতের ব্যানারেই। মেলায় যদি বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায় তাহলে প্রশাসনকে আমি কি জবাব দেব।” পাল্টা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্যের দাবি,”মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়িজন সদস্যের উপস্থিতি ছিল। তারা কি করে খবর পেলেন। এখানে তো কাউকে ব্যক্তিগতভাবে জানানোর ব্যাপার নেই। কাউকে হুমকি দেওয়ারও কোন ব্যাপারই নেই। এই ধরনের মেলা পঞ্চায়েত আইনে বলছে পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে থাকবে। এমনকি আমাদের তরফ থেকে সমস্ত রকম ভাবেই পঞ্চায়েতের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে।” নিজেদের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই তো বাংলায় কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, কটাক্ষ করে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি রমন শর্মা বলেন,”প্রধানের ক্ষেত্রে মেলা হচ্ছে। আমন্ত্রণ পত্রের প্রধানের নাম রয়েছে। অথচ প্রধানকে কেউ আমন্ত্রণে জানায়নি। এতেই বোঝা যাচ্ছে বাংলার পরিস্থিতি কি অবস্থায় রয়েছে।” দলের মধ্যে কোন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের একটাই লক্ষ্য ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করা বলে বিরোধীদের কটাক্ষকে উড়িয়ে দেন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়।

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজ হান্ট অফিসের ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ