গত ১লা থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারি নিউদিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত চতুর্থ ওয়াকো ইন্ডিয়া ওপেন ইন্টারন্যাশনাল কিকবক্সিং প্রতিযোগিতায় দেশের হয়ে অংশগ্রহণ করেছিল দুর্গাপুর শহরের মাত্র ৮বছর বয়সী আরাধ্যা ধীবর। আর সেখানেই প্রথমবার অংশগ্রহনকারী খেলোয়াড় দের মধ্যে তিনটি ইভেন্টে ট্রিপল গোল্ড পেল আরাধ্যা।সাথে আরও একটি ইভেন্টে সিলভার পায় সে।বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশের হাজার অধিক কিকবক্সিং খেলোয়াড় বিভিন্ন বয়সী ও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেছিল। গ্রেট ব্রিটেন, উজবেকিস্তান, কাজাকস্থান, নেপাল সহ অনেক দেশের সাথে ভারতের খেলোয়াড়রাও যথেষ্ট উন্নতমানের খেলা প্রদর্শন করেন।

তাদের মধ্যে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি স্বর্ণপদক পেয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে দুর্গাপুরের আরাধ্যা।জাতীয় স্তরে বিগত বছর পুনেতে জোড়া পদক পাওয়ার পরই সুযোগ আসে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার। চিলড্রেন ক্যাটাগরি তে -৩৬ ও +৩৬ ওজনের বিভাগে পয়েন্ট ফাইটে এবং মিউজিক্যাল ও ক্রিয়েটিভ ফর্ম বিভাগে অংশগ্রহণ করে খুদে আরাধ্যা।ক্রিয়েটিভ ফর্ম ও মিউজিক্যাল ফর্ম বিভাগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে একটি গোল্ড ও একটি সিলভার পায়| -৩৬ ও +৩৬ ওজনের বিভাগে পয়েন্ট ফাইটে দুটি গোল্ড পেয়েছে আরাধ্যা।মাএ ১বছর ধরে দুর্গাপুরের প্রশিক্ষক ঈশ্বর মাজির তত্ত্বাবধানে এল এস এম কিকবক্সিং একাডেমী তে প্রশিক্ষণ নেওয়া আরাধ্যা ইতিমধ্যেই ৬টি বড় প্রতিযোগিতায় প্রায় ২০র অধিক পদক পেয়েছে। জেলা স্তরে ও রাজ্য স্তরে দুটি করে গোল্ড ও সিলভার এবং জাতীয় স্তরে দুটি ব্রোঞ্জ উল্লেখযোগ্য। কিছুদিন আগেই রাজ্য ব্যাপী ইন্টার স্কুল গেমসেও স্বর্ণ পদক পায় আরাধ্যা| দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হওয়া সাউথ বেঙ্গল কিক বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ ও স্পোর্টস কার্নিভালেও পদক লাভ করে।পশ্চিম বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস কিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক ফিরোজ খান বলেন,আন্তর্জাতিক ম্যাচে আরাধ্যা তিনটি স্বর্ণপদক পেয়ে আমাদের জেলা রাজ্য তো বটেই পুরো দেশকে গর্বিত করেছে।

প্রশিক্ষক ঈশ্বর মাজির কথায়, আমরা খুবই গর্বিত। আরাধ্যা বয়সে ছোট হলেও কিক বক্সিং খেলার প্রতি তার আগ্রহ ও কঠোর অনুশীলন ওকে ভবিষ্যতে দেশের অন্যতম বড় খেলোয়াড় হবার দিকে নিয়ে যাবে। তবে এই খেলার জন্য প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক মানের সরঞ্জাম এর অভাব রয়েছে একাডেমীর কাছে সেগুলি কোন ব্যক্তি , সংস্থা বা সরকার এর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করলে আরাধ্যার মতো আরো খেলোয়াড় তৈরি হবে এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। আরাধ্যা দুর্গাপুর ফিরলে আমরা সম্বর্ধনা দেব।মা কাকলী ধীবর বলেছেন, আমরা সকলেই গর্বিত যেভাবে ও চারটি ইভেন্টে চারটি পদক পেয়েছে।তার মধ্যে তিনটি গুরুত্বপুর্ন স্বর্ণ পদক দেশকে উপহার দিয়েছে। এরপর বাইরের দেশে খেলার সুযোগ পাবে। কিন্তু এই খেলার সরঞ্জাম অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও বিদেশে খেলতে গেলে লক্ষাধিক টাকা খরচ যা একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে ব্যয় করা অসম্ভব। তবু আমরা আশাবাদী আরাধ্যার আগামি ভবিষ্যতের জন্য।বলাবাহুল্য পশ্চিমবঙ্গের তথা দুর্গাপুরের এক অন্যতম ক্রীড়াবিদ হিসাবে এবার আরাধ্যা নামও অন্যান্য তারকা ক্রীড়াবিদদের পাশে থাকবে।