দুর্গাপুরে সমবায় ব্যাঙ্কের মনোনয়ন পত্র তোলার শেষ দিনেও “”ভুয়ো সন্ত্রাস”” র অভিযোগ তুলে এলোনা সিটু

দুর্গাপুর, ২১ ফেব্রুয়ারী: আইএনটিইউসি, এইচএমএসকে সঙ্গে নিয়ে জোট বাঁধলো আইএনটিটিইউসি! আর তাদের মনোনয়ন দাখিলকে ঘিরেই হাতাহাতি থেকে উত্তেজনা। তৃণমূলের সন্ত্রাসেই দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কো-অপারেটিভ নির্বাচন হলো একতরফা, অভিযোগ তুলে ক্ষোভে বিএমএস আর সিটু। কোনো সন্ত্রাস হয়নি পাল্টা তৃণমূল।

আট বছর পর দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কো-অপারেটিভ ব্যাংকের নির্বাচন। এই ব্যাঙ্কে রয়েছে ১২ হাজার গ্রাহক। রয়েছে ৪২টি আসন। ২০১২ সালে এই ব্যাঙ্কের নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল। ২০১৭ সালে মেয়াদ শেষ হবার পর থেকে আট বছর ধরে হয়নি নির্বাচন। রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের হস্তক্ষেপে ২০২৫ সালে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়। তারই মধ্যে হিন্দুস্তান মজদুর সংঘ (HMS), কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত হিন্দুস্তান স্টিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে অলিখিতভাবে জোট বাঁধে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল প্লান্ট মজদুর ইউনিয়ন।

হিন্দুস্তান স্টিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নকে ৬টি আসন, হিন্দুস্থান মজদুর সংঘকে ৩টি আসন এবং তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের হিন্দুস্তান স্টিল প্লান্ট মজদুর ইউনিয়নের ৩৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ৩৫টি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে। যাকে ঘিরেই শুরু হয় নিজেদের মধ্যে চূড়ান্ত দ্বন্দ্ব, হাতাহাতি। চরম উত্তেজনা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় দুর্গাপুর থানা পুলিশকে। মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রথম দিন থেকেই ব্যাংকের ত্রি সীমানায় দেখা যায়নি ভারতীয় মজদুর সংঘ ও সিটুর কোন প্রতিনিধিকে। তারা কার্যত দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকেই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বিরুদ্ধে সরব হয়। সিটুর সভাপতি বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রথম দিন থেকেই বহিরাগতদের দিয়ে গোটা এলাকা সন্ত্রস্ত করেছে তৃণমূল। সেই জন্যই আমাদের কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করতে যেতে পারেনি। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, ব্যাংককে রক্ষা করার মত পরিস্থিতি কি ছিল না? সেই জন্যই কি মনোনয়নপত্র দাখিল আটকাতে বহিরাগতদের নিয়ে আসা হলো? সকলকে অংশগ্রহণ করতেও দেওয়া হলো না।এভাবেই ওরা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।” পাল্টা হিন্দুস্তান স্টিল প্লান্ট মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশীষ ঘোষ বলেন,”শিল্প নগরীর আবহাওয়াকে সুষ্ঠ রাখার জন্য দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের আমরা আহ্বান করেছিলাম। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে এইচএএইচএমএস এবং আইএনটিইউসি। সিটু আর বিএমএসের কর্মীরা বলেছিল আমরা লড়তে চাই। আমরাও ওদের সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু উনাদের কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসেননি আর কেউ জমাও দেননি। সন্ত্রাসের কোন আবহই তৈরি হয়নি। ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে বিরোধীরা।” বহিরাগতদের দিয়ে ব্যাংকের চতুর্দিক ঘিরে রাখা হয়েছে বলে তৃণমূলকে আক্রমণ করে বিএমএস অনুমোদিত দুর্গাপুর ইস্পাত কর্মচারী সংঘের কার্যকরী সদস্য মানস চট্টোপাধ্যায় বলেন,”ব্যাংকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলে শুধু প্রাণ সংশয়ই নয়, অনেক কিছুই হতে পারতো। অযোগ্যদের হাতে ব্যাংক এলে কি পরিস্থিতি হতে পারে সবাই বুঝতে পারছে। পুলিশের কাছে আমরা অভিযোগ করতে গেলেও কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমরা অরাজনৈতিক দল। আমাদের ভয় পাচ্ছে সে জন্যই আমাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে দেওয়া হয়নি।” তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন,”আইএনটিটিইউসি ছাড়াও আইএনটিইউ সি ও এইচএমএস মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে। সিটুর এই মুহূর্তে কোন জনসংযোগ নেই সেই জন্য ওদের হয়ে কেউ দাঁড়াতে চাইছে না। ওরা কোন প্রাপ্তি খুঁজে না পেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। বিএমএসএরও দুর্বলতা রয়েছে সেই দুর্বলতাকে ঢাকার জন্য নানান কথা বলছে।”

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *