কীর্তি আজাদের কয়লামন্ত্রীকে লেখা চিঠি প্রত্যাহার!কিন্তু কেন?

দুর্গাপুর, ২ অগাস্ট : বাংলায় একটি প্রাচীন প্রবাদ আছে “”গাধা জল খায়, কিন্তু ঘেঁটে খায়। “”এই প্রবাদ কি সমান ভাবে প্রযোজ্য হল বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদের ক্ষেত্রে? কেন বলছি এমন কথা? হয়তো আপনারা এই কথাই ভাবছেন? তাইতো? তাহলে শুনুন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদ গত ২৩শে জুলাই কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী কে একটি চিঠি লিখেন। তাতে তিনি স্পষ্ট করে ইসিএলের বিরুদ্ধে কার্যত কয়লা নিয়ে দুর্নীতির জন্য অভিযোগের আঙ্গুল চলেন। পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ কয়লা দুর্নীতি নিয়ে ইডি ও সিবিআই তদন্তের দাবী জানায়। তৃণমূল সাংসদ হঠাৎ করে এ রাজ্যের পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে কেন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির উপর ভরসা দেখালেন? তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এই বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কিন্তু কীর্তি আজাদের চিঠি লেখার মাত্র ১০ দিনের মাথায় কি এমন ঘটলো যে ফের আবার বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের এই তৃণমূল সাংসদ কে কয়লা মন্ত্রী জি, কিষান রেড্ডিকে গত ২৩ তারিখে তার লেখা চিঠি প্রত্যাহার করে নিতে হলো? এবং সেই চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করলেন যে তার কাছে যে সংবাদ ছিল তার সত্যতা ছিলনা।

উল্লেখ্য কীর্তি আজাদ সাংসদ হওয়ার পর বারে বারেই বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনো নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যাওয়ার সময় বর্ষিয়ান তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতান্তর। তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেসের হাইকমান্ড এর পক্ষ থেকে কয়লা দুর্নীতি নিয়ে কীর্তি আজাদের কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রীকে ইডি ও সিবিআই তদন্তের দাবী জানিয়ে লেখা চিঠি নিয়ে তীব্র ভৎসনার মুখে পড়তে হলো? আর সেই কারণেই কি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে কীর্তি আজাদ সেই চিঠি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন? ২০২৬ এর নির্বাচনের আগে বিজেপি ফেরত এই নেতার জন্য কি অস্বস্তিতে পড়তে হল ঘাসফুল শিবিরকে? কীর্তি আজাদের কয়লামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিকে ঘিরে ঘরে বাইরে সমালোচিত কীর্তি আজাদের ভুমিকা।তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদ সম্প্রতি ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের (ECL) বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।কী কারণে তিনি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন?কীর্তি আজাদের অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু হলো ইসিএল-এর বিভিন্ন কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম। তিনি দাবি করেছেন যে, কোম্পানিটিতে কয়লা উত্তোলন, পরিবহন, চুক্তি প্রদান এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। তার মতে, এই দুর্নীতির ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে এবং এর সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা লাভবান হচ্ছেন।কাকে চিঠি লিখেছেন?এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কীর্তি আজাদ কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকে একটি চিঠি লিখেছেন।

চিঠিতে তিনি এই দুর্নীতির দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, যেমন সিবিআই (CBI) এবং ইডি-কে (ED) যুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, শুধুমাত্র এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব।এই কথার মাধ্যমে কীর্তি আজাদ কার্যত এ রাজ্যের পুলিশের ভূমিকাকেও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন বলে মনে করেছিলেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। এই চিঠি এবং দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার এই চিঠিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন যে, তৃণমূল এখন নিজেরাই সিবিআই এবং ইডি তদন্তের দাবি করছে, যা তাদের পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজ হান্ট অফিসের ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ