কাঁকসা,১৫ ফেব্রুয়ারী : আচমকা স্কুলে ঢুকলেন মন্ত্রী। মাটিতে বসে ‘মুখে হাসি,বুকে বল, তেজে ভরা মন, ‘মানুষ’ হইতে হবে- এই তার পণ?’ সুকুমার রায়ের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতা শুনে শিশুকে বুকে টেনে নিলেন টেনে। তারপরেই খুদে পড়ুয়াদের কাছে শুনলেন তাদের অভাব অভিযোগ। তাদের সাথে গল্প করে কাটালেন বেশ কিছুটা সময়। রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে এই ভূমিকায় দেখে আশপাশের সবাই দিলেন হাততালিও। শনিবার সকালে হঠাৎ মলানদিঘী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থামলো মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কনভয়। তারপরেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আর কর্মাধ্যক্ষকে নিয়ে ঢুকে পড়লেন প্রাইমারি স্কুলের ভেতর। তখন বিদ্যালয়ের ভেতর খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে চলছিল স্কুলের বাগানে সাপ্তাহিক ‘আনন্দ পরিসর’। বাগানে আসনের উপর বসে পড়ুয়াদের নানান বিষয় নিয়ে সচেতন করছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। সেইসময়, মন্ত্রীকে দেখে শিক্ষক শিক্ষিকরাও চমকে গেলেন। তাড়াতাড়ি চেয়ারের ব্যবস্থাও করলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। কিন্তু মন্ত্রী বাগানের মাটির ওপর পাতা আসনেই বসে পড়লেন। খুদেদের কাছে শুনতে চাইলেন কবিতা। দ্বিতীয় শ্রেণীর ঋষি রুইদাস উঠে দাঁড়িয়েই সুকুমার রায়ের আদর্শ কবিতা শোনালেন। কবিতা শুনে খুশি হয়ে ঋষিকে জড়িয়ে ধরলেন মন্ত্রী। আরেক খুদে পড়ুয়া ‘আমরা চাষ করি আনন্দে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা শোনালো। সেই খুদের সাথেও হাত মেলাতে দেখা গেল মন্ত্রীকে। পড়ুয়াদের কাছে অভাব অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন মন্ত্রী। তারপর স্কুলের-শিক্ষক শিক্ষিকাদের সমস্যার কথাও শুনতে দেখা গেল।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সময় কাটালেন স্কুলেই। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ঋষি রুইদাসের কথাই,”আমার খুব ভালো লাগলো। আমি সুকুমার রায়ের আদর্শ কবিতা শোনালাম স্যারকে।” স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিঠু মন্ডল বলেন,”আজকের আনন্দ পরিসর খুব সুন্দর ভাবে কাটলো। মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার আমাদের মাঝে এসেছিলেন। আমাদের স্কুলের পড়ুয়াদের সাথে নানান অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন। উনি চেয়ারেও বসেননি। পড়ুয়াদের সাথে মাটিতে বসেছিলেন। আমরা গর্বিত।” মন্ত্রী বলেন,”স্কুল মানেই বন্দিশালা নয়। সুন্দর পরিবেশে শিক্ষা হবে সেটাই আমরা কামনা করি। দু’জন আমাকে কবিতা শোনালো। আমিও খুব ভালো একটা নিদর্শন পেলাম। শিক্ষক শিক্ষিকারাও অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে পড়ুয়াদের এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।”