দুর্গাপুর, ১৭ মার্চ: ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী এক মহিলা। মৃতা মহিলার নাম চৈতালি বণিক, ধোবি ঘাটের কর্মকার পাড়ার বাসিন্দা, বয়স আনুমানিক বছর ৪০ পেশায় দুয়ারে দুয়ারে ধূপকাঠির ব্যবসা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বছরখানেক আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয় এরপরে অসহায় মহিলা চৈতালি দেবী সংসার চালাতে দুয়ারে দুয়ারে ধূপকাঠির ব্যবসা করতেন। এর মাঝে বিভিন্ন মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানি থেকে বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। বর্তমানে অভাবের তাড়নায় সেই ঋণ শোধ করতে না পারায় কোম্পানির লোকজন বাড়িতে এসে দেখে প্রায়শই অপমান করত বলে অভিযোগ । বর্তমানে তার দুই কন্যা যাদের মধ্যে ছোট মেয়ে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে,স্বামী মৃত। অভাবের তাড়নায় ঋণের টাকা ঠিক মতন দিতে পারছিলেন না। আজ অর্থাৎ সোমবার দুপুরে সে বিষয়ে তার বড় মেয়ের সঙ্গে বচসা হয় এরপর মেয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলে বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ তিনি চৈতালী বণিক ঘরের দরজা আটকে টিনের চালের পাইপের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। মৃতা মৃতা চৈতালি বণিকের ননদ সোমা বণিক জানান অত্যাধিক ঋণের দায়ে এই আত্মহত্যা।
আজ দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর বড় মেয়ের সঙ্গে অল্প একটু ঝামেলা হয়। এরপরে মেয়ে বাইরে চলে গেলে দরজায় খিল আটকে আত্মহত্যা করে।সাম্প্রতিক কালে বেশকিছু মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি এই সমস্ত মহিলাদের আর্থিক অবস্থার কথা বিচার-বিশ্লেষণ না করে তাদেরকে মোটা অংকের ঋণ দিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। তারপর সেই দিন মেটাতে না পেরে এরকম চরম পরিণতি ঘটছে। উল্লেখ্য এর আগে দুর্গাপুরের গোপালমাঠ এলাকাতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। দুর্গাপুরের আমরাই গ্রামে বাদ্যকর পাড়ায় প্রায় ৪০ জন মহিলা বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ঋণ নিয়ে সেই টাকা তুলে দেয় অন্য দুই মহিলার হাতে বলে অভিযোগ। এখন সেই দুই মহিলা ওই 40 জন মহিলাদের হয়ে ঋণের মাসিক কিস্তি মেটাচ্ছেন না। যে কারণে ওই 40 জন মহিলাকে এই বেসরকারি মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলির প্রতিনিধিরা প্রায় প্রতিদিন মাসিক কিস্তি দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। অনেকে দিতে পারেননি বলে কাদের বাড়িতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এই বিষয়টি নিয়েও জল ঘোলা শুরু হয়েছে। ওই মহিলারা ওয়ারিয়া ফাঁড়িতে এবং পরে দুর্গাপুর থানায় পুলিশের কাছে যায়। মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তারা কেন এই সমস্ত হতদরিদ্র পরিবারের মহিলাদের এভাবে মুড়ি মুড়কির মত ঋন দিচ্ছেন?তাও আবার এক একজনকে ৪-৫ টি আলাদা আলাদা মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানি কিভাবে ঋন দিচ্ছেন? প্রশাসনিকভাবে এই বিষয়টিতে দ্রুত কড়া নজরদারি না চালানো হলে ধোবিঘাটের মতো ঘটনা অদূর ভবিষ্যতে আরও ঘটবে।।দুর্গাপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। কিভাবে এই মহিলার মৃত্যু হল তা জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর। ঘটনা তদন্তে দুর্গাপুর থানার পুলিস