২০ জনকে জখম করে প্রতিশোধের জেরে প্রাণ গেল হিংস্র হায়নার

দুর্গাপুর, ২৭ ডিসেম্বর : প্রতিশোধের আগুন এসে পড়ল বন্যপ্রাণীর ওপর। সকাল গড়িয়ে বেলা হতেই রহস্য মৃত্যু হিংস্র হায়নার। তবে কী এলাকাবাসির লাঠির আঘাতেই মৃত্যু হল তার? নাকি নেপথ্যে লুকিয়ে অন্য ঘটনা? ঘটনা বুদবুদ থানা এলাকার দেবশালার। শনিবার সকালেই জানা গিয়েছিল জঙ্গলে ভয়ঙ্কর বন্যপ্রাণীর আক্রমণে জখম হয়েছেন প্রায় ২০ জন এলাকাবাসী। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই বনদপ্তরে আধিকারিকরা জখমদের পানাগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক শিশুকে পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার পর থেকেই থমথমে হয়েছিল পরিবেশ।

আতঙ্কে ছিলেন এলাকাবাসীরা। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটে গেল মারাত্মক এক ঘটনা।

প্রশ্ন উঠছে, প্রতিশোধের আগুনে কি পুড়ে মরতে হলো এই বন্যপ্রাণীকে? এলাকাবাসীর লাঠির আঘাতে কি প্রাণ গেল তার? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, লাঠি হাতে ওই হায়নার দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন অনেকে। এলাকাবাসীর সূত্রে এও জানা যাচ্ছে যে, কুকুরের কামড়ের জেরে আরও হিংস্র হয়ে উঠেছিল ওই বন্যপ্রাণী। আপাতত সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বনদপ্ত। সূত্রের খবর ময়না তদন্তের জন্য বর্ধমান পাঠানো হবে ওই হায়নার মৃতদেহ।

উল্লেখ্য, বারেবারেই বিলুপ্তপ্রায় ধূসর নেকড়ে ও হায়নার দেখা মিলছে দুর্গাপুরের বনাঞ্চলে।বন দফতরের দাবি, বনাঞ্চলের পরিমাণ বেড়েছে বলেই ওই জন্তুগুলির দেখা মিলছে। জঙ্গলে উপযুক্ত খাদ্য পাচ্ছে প্রাণীগুলি। জীবজন্তুদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে উঠেছে। গত কয়েকবছর আগে থেকেই দুর্গাপুর-ফরিদপুর, পাণ্ডবেশ্বর ও কাঁকসার বনাঞ্চলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে হঠাৎই হায়না ও ধূসর নেকড়ে দেখতে পান স্থানীয় জঙ্গল ঘেরা গ্রাম গুলির বাসিন্দারা। পাণ্ডবেশ্বরের জঙ্গলেও হায়নার দেখা মিলেছিল। এর পাশাপাশি দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহার জঙ্গলে একটি ধূসর নেকড়ে দেখতে পাওয়া যায়।সেই সময় ওই এলাকাগুলিতেও যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।
বিশেষ করে লাউদোহার মাধাইগঞ্জের জঙ্গলেও নেকড়ে দেখা দেওয়ার কারণে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে কিন্তু বিষয়টি অত্যন্ত আশা ব্যঞ্জন বলেই মনে করেছিল ৷বনদপ্তর এর কথাই মূলত বনাঞ্চল বৃদ্ধি পাওয়ায় ও জঙ্গলে মানুষের অবাধ প্রবেশ কমে যাওয়ায় ওই জন্তুগুলির আবির্ভাব হয়েছে। আর এবার হায়না মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য দেবশালায়।

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজ হান্ট অফিসের ঠিকানা এবং যোগাযোগের বিবরণ