মমতার কড়া দাওয়াই,দুর্গাপুরে অভিযান শুরু

দুর্গাপুর, ২৫ জুন: মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের পরেই জেলায় জেলায় অ্যাকশন। সেই অ্যাকশনে নেমে সরকারি জমি দখল করে তিন অবৈধ মদ কারবারিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। বৈঠক থেকে সমালোচনা করেছেন দুর্গাপুর পুরসভার কাজ নিয়েও। ৪৩ জন কাউন্সিলর থাকার থেকেও পাঁচজন পুর প্রশাসক মিলে দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় যথেষ্ট কাজ হয়েছে দাবি প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যানের। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের জমি দখলদারীদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলবে দাবি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের। দখল হচ্ছে বলেই দলটা আছে অভিযান শুরু হলেই দলটা উঠে যাবে সমালোচনায় সরব বিজেপি বিধায়ক। সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তের প্রশাসনিক আধিকারিকদের কড়া ধমক দিয়ে বলেন কোন অবৈধ কাজ বরদাস্ত করা হবে না।

দুর্গাপুরের ওয়ার্ডগুলিতেও কাজ হচ্ছে না। সৌন্দর্যায়নের জন্য এত টাকা খরচ করেছি কিন্তু দেখার কেউ নেই। যে ওয়ার্ডগুলিতে কাউন্সিলর নেই সেখানে একটি ফর্মুলা বের করার নির্দেশ দেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। তারপর থেকেই রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। দুর্গাপুরেও শুরু হয়েছে সেই অভিযান। আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের বহু জমি দখল করে চলছে অবৈধ কাজকর্ম। কোথাও ধাবা, গাড়ির গ্যারেজ, হোটেল, পার্কিং, ক্লাব, খাটাল গজিয়ে উঠেছে, ফুটপাতও দখল হয়ে যাচ্ছে।একাধিকবার অভিযান চালানোর পরেও বন্ধ হয়নি সেই অবৈধ কাজকর্ম। দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার জাতীয় সড়ক লাগোয়া আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের জমির বেড়া কেটে গজিয়ে উঠেছে বহু ধাবা। সেখানে অবৈধভাবে মদ বিক্রির পাশাপাশি দুষ্কৃতিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। অসামাজিক কাজকর্মও চলতে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী ‘রনংদেহি’ মূর্তি ধারণ করতেই নড়ে চড়ে বসলো আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। সোমবার রাতেই ওই ধাবাগুলিতে অভিযান চালায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা। গ্রেপ্তার করা হয় তিন অবৈধ কারবারিকে। প্রতিটি প্রান্তেই পর্ষদের জমি দখলকারীদের দ্রুত সরে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ৯০৪৬২২৩৬৫০, ৯০৪৬২২৩৬৫১ দুটি হেল্পলাইন নাম্বার চালু করেছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। আসানসোল দুর্গাপুর – উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন,”শুধু আসানসোল দুর্গাপুর – উন্নয়ন পর্ষদেরই জমি না দখল হয়ে রয়েছে পুরসভা, বনদপ্তর সহ সরকারি নানান দপ্তরের জমি। তবে আসানসোল দুর্গাপুর – উন্নয়ন পর্ষদের জমি দখল মুক্ত করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই জন্য এগিয়ে আসতে হবে এলাকার মানুষদের থেকে জনপ্রতিনিধিদেরও। পরবর্তীতে আবার অবৈধভাবে কোন কাজকর্ম শুরু হলে দ্রুত অভিযোগ জানানোর জন্য দুটি হেল্পলাইন নাম্বার চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে তৎপরতা আরো বেড়েছে বলে জানান।” দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মন্ডলের চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন,”মুখ্যমন্ত্রী পুরসভা গুলোকে নিয়ে যা সমালোচনা করেছেন তা গঠনমূলক। হঠাৎ করে রাতারাতি এসে যারা ফুটপাত এবং জমি দখল করে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেহেতু আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদেরই অধিকাংশ জমি। তাই নিশ্চয়ই কঠোর পদক্ষেপ নেবে পর্ষদের আধিকারিকরা আমরা যথার্থভাবে সহযোগিতা করব। দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় ৪৩ জন কাউন্সিলর থাকলে যা কাজ হতো তার থেকে ৫ জন পুর প্রশাসক মিলে বেশি কাজ করি।”সমালোচনায় সরব হয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই বলেন,”যারা প্রোমোটার যারা দুষ্কৃতি তাঁরা পুকুর বুজিয়ে সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ করছে বহুতল। অনুমতি দিচ্ছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ আর পুরসভা। যারা দখল করছে আসানসোল দুর্গাপুরে উন্নয়ন পরিষদের জমি সরকারি জমি তাঁরা আছে বলেই দলটা আছে। অভিযান শুরু করলে দলটাই উঠে যাবে। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর বলেছেন অবৈধ কাজকর্ম করতে দেব না তাঁকে আমার সাধুবাদ। কিন্তু এতটাই অবৈধ জমি দখল চলছে। ফোন আসতে আসতে বিরক্ত হয়ে সেই হেল্প লাইন নাম্বারও বন্ধ করে দেবে।”

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *