দুর্গাপুর, ৫ মার্চ: সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদানের কথা জানান হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলায় একটার পর একটা রায় দিয়ে ক্রমশ কোণঠাসা করেছিল রাজ্য সরকারকে। সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় অবতীর্ণ বহু মানুষ হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কে নিয়ে এক অন্য স্বপ্নে যখন বিভোর তখন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতির কালো পোশাক রেখে দিয়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন। আর তাই নিয়েই এই কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত তুফান উঠেছে। সমালোচকদের চোখা চোখা মন্তব্য যেমন কমেন্ট বক্সে , পাশাপাশি অনেকেই আবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে অবতীর্ণ হওয়াকে সমর্থন করে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
এক সময় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যখন হাইকোর্টে বিচারপতির আসনে বসে সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় রায় দিয়ে চলেছেন, পুলিশকে করা হুঁশিয়ারিসহ নির্দেশ দিচ্ছেন, এমনকি কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলির ভূমিকার প্রবল সমালোচনা করছিলেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় সেই সময় রাজ্যের বহু মানুষ তাকে “” বাপের বেটা”” বলার পাশাপাশি এ রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি যখন পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়ে নিজেকে বিচারপতির জায়গায় একজন বিজেপি নেতা হিসাবে নিজের পরিচয় তুলে ধরলেন সেই সময় শুরু হয়েছে তার এই সিদ্ধান্তের প্রবল সমালোচনা । সিপিআইএমের যুব সংগঠন DYFI এর রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডালের সিদুলি দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বলেন,””একজন ব্যক্তির যেকোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান করার পূর্ণ অধিকার আছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে বিজেপি যেভাবে সংবিধানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙ্গে দিয়ে দেশজুড়ে শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে,সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একজন বিচারপতি যদি তার নিজের দায়বদ্ধতা ভুলে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তাহলে সেটা রাজ্য তথা দেশের পক্ষে কতটা ভালো হবে তা আমার জানা নেই। “” অন্ডালের সিঁদুলিতে সিপিআইএমের জনসভায় যোগ দিতে এসে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সন্দেশখালীর ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন , “”সন্দেশখালীর ঘটনার প্রভাব পড়বে লোকসভা নির্বাচনে। আর তা পড়া উচিত। আর তা না হলে সেটা আমাদের এবং আপনাদের সবার দুর্ভাগ্য। ভোট লুট করে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য থেকে তৃণমূল নেতাদের সন্দেশখালিতে যে অত্যাচার যে নিপীড়নের ইতিহাস তৈরি হয়েছে তাতে করে গোটা রাজ্যে সন্দেশখালি হচ্ছে একটা উদাহরণ। আর এই সরকার, তৃণমূল দল এই অত্যাচারীদের পূর্ণ মদত করে যাচ্ছে আজ অবধি। এটাই রাজ্যের মানুষকে বুঝে দেখতে হবে। “”