দুর্গাপুর, ২১ মার্চ: গত কয়েকদিন আগে দুর্গাপুরে এসে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখার জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলার ৯ টি বিধানসভার দায়িত্ব দেওয়া হয় বিভিন্ন নেতাদের।দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে।আবারও পরিবর্তন? বৃহস্পতিবার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বিধানভবনে জরুরী বৈঠক করলেন। ২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান – দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছিল শাসকদলের প্রার্থী ডা: মমতাজ সংঘমিতার।২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনেও দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে পরাজয় ঘটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরে প্রায় ৮০ হাজার ভোটে লিড পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুহওয়ালিয়া। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরের যে সকল ওয়ার্ডগুলোতে শাসক দলের প্রার্থীরা পিছিয়ে পড়েন সেই সমস্ত ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরদের তুলোধোনা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।গত লোকসভার হার নিয়ে প্রাক্তন পুরপিতা ও প্রাক্তন পুরমাতাদের ধমক দিয়ে এলাকার উন্নয়নের খতিয়ানের কৈফিয়ৎ চেয়ে দলীয় নেতৃত্বদের সতর্ক করলেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী।শুক্রবার বিকেলে দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীর বিধান ভবনে রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তথা দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর নগরনিগমের প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব প্রভাত চট্টোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর লাহা সহ বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভার প্রার্থী কীর্তি আজাদকে সঙ্গে নিয়ে কর্মীসভা করেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এই কর্মী সভায় যোগ দেন ৪২টি ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরপিতা ও পুরমাতাগন এবং দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম সাংগঠনিক ব্লকের নেতৃত্বরা। দলীয় সূত্রে খবর, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বক্তব্য রাখতে গিয়েই দুর্গাপুরের ৪২ টি ওয়ার্ডের পুরপিতা ও পুরমাতাদের ধমক দিয়ে বললেন,”” আপনাদের এলাকার লোকেরা তো চেনেনই না। অনেকে আপনাদের ফোন নম্বরও জানেন না। দুর্গাপুর পুরনিগমের পাঁচ বছরের মেয়াদ এবং দু’বছর মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়ে ৭ বছরে কি কি কাজ করেছেন?লোকসভা নির্বাচনে নিজের নিজের এলাকায় কত ভোটে লিড দিতে পারবেন?”” সেই উত্তরও চাইলেন। নথিভুক্ত করলেন। এরপর অরুপ বিশ্বাস বলেন,””ভোটার লিস্ট সবার বালিশের নিচেই থাকে। কেউ স্কুটিনি নিয়েও ভাবেন না। “”ভোটার লিস্ট স্কুটিনি নিয়ে গুরুত্ব দিলেন মন্ত্রী। তারপরেই শ্রমিক সংগঠনের দ্বন্দ্ব নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বদের সতর্ক করলেন তিনি। ধীরে চলার বার্তা দিলেন শ্রমিক সংগঠনকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন,”লোকসভা নির্বাচনে বিপুলভোটে প্রার্থী কীর্তি আজাদকে জয়লাভ করার জন্যই এই সভা। আমরা সবাই একত্রিত আমাদের মধ্যে কোন ভাগ নেই। রাজনীতিতে কার জয় হবে বোঝা মুশকিল কিন্তু মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ রয়েছে। সেই উৎসাহ আর উন্মাদনা দেখেই বোঝা যাচ্ছে বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূলের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।””কিন্তু “”বিশু “”র জায়গায় সুভাষ মন্ডলকে দায়িত্ব কেন দিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস? তাই নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের সাংগঠনিক দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে যাওয়ার পরেও হঠাৎ অরূপ বিশ্বাস কেন সুভাষ মন্ডল কেই দায়িত্ব দিলেন? তা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হল ফের দুর্গাপুরে।