দুর্গাপুর, ৮ মার্চ: টাকার বিনিময়ে বহিরাগতদের কাজ দিচ্ছে দলেরই একদল নেতা। এই অভিযোগ তুলে ঝান্ডা হাতে প্রতিবাদ মিছিল আর বিক্ষোভে তৃণমূল কর্মীরা। দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোকওভেন থানার সগড়ভাঙা কলোনীতে বেশ কয়েকটি বেসরকারি কারখানা রয়েছে। গত ১২ বছর ধরে সেই কারখানায় স্থানীয়রা কাজ পাচ্ছে না অথচ কারখানার দূষনের যন্ত্রনা তাদেরকেই ভোগ করতে হচ্ছে।
নিয়োগ সংক্রান্ত যোগ্য স্থানীয়দের তালিকা দলীয় নেতৃত্বকে দেওয়া হয়েছে অনেকবার। কিন্তু কাজ হয়নি, বরং প্রতিনিয়ত নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছে। অথচ বাঁকুড়া, বীরভূম সহ ভিন জেলা থেকে দিব্বি লোক ঢুকে কাজ করছে কারখানাগুলিতে। আর স্থানীয়রা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বঞ্চিত হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে প্ল্যাকার্ড আর মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ব্যানার আর দলের ঝান্ডা নিয়ে সগড়ভাঙা কলোনির ঐ কারখানা গুলির সামনে দিয়ে মিছিল করে প্রতিবাদে দুর্গাপুরের ২৮এবং ২৯নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূল কর্মীদের একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কর্মী নিয়োগে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ এনে সরব হওয়া শুধু নয়, রাস্তায় ঝান্ডা নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হওয়ায় লোকসভা ভোটের আগে বেশ বিড়ম্বনাতে পড়েছেন ঘাসফুল শিবির। আন্দোলনরত তৃণমূল কর্মী রঞ্জিত মালির অভিযোগ, “বহিরাগতদের কারখানায় কাজ দেওয়া হচ্ছে। আর স্থানীয়রা চূড়ান্ত সমস্যার মধ্যে দিন যাপন করছেন। দীর্ঘদিন আগে থেকে নেতারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন স্থানীয়দের কাজ দেওয়ার। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হচ্ছে না। অথচ পার্শ্ববর্তী জেলার ছেলেরা দিব্যি কারখানার ভেতর ঢুকছেন। স্থানীয়দের কাজ দেওয়া না হলে কারখানার ভেতর কোন নেতাদের ঢুকতে দেবেন না আর বহিরাগত নেতাদেরও ঢুকতে দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।” কটাক্ষ করে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘরুই বলেন,”কাটমানি নিয়ে কাজ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের কাজ দেওয়া হচ্ছে না। আর সেই কাটমানি নিচ্ছে তৃণমূলের নেতারাই। সেইজন্যই আন্দোলন করেছে তৃণমূল কর্মীরা। মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন স্থানীয়দের কাজ দেওয়ার কিন্তু আদতে কোনো কাজই পাচ্ছেন না তাঁরা।” পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন,”তৃণমূলের নেতারা উপঢৌকোন নিয়ে কাজ দিচ্ছে বহিরাগতদের। আর কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন আঁতাত তৈরি করছে। কিন্তু স্থানীয়দের কেন কাজ দেওয়া হচ্ছে না এই প্রশ্নও তিনি তোলেন।”যদিও রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন,”ওই কারখানাগুলিতে নতুন করে লোক নিয়োগ হচ্ছে না। যাতে ওই এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরা কাজ পায় সেই ব্যবস্থাও করবে নেতৃত্ব। কিন্তু কেউ বঞ্চিত হলে প্রতিবাদ হবে। প্রতিবাদ করে রাজ্য নেতৃত্বকেও জানানো হয়।”