কাঁকসার তিনটি খুনের দায়ে গ্রেপ্তার কাকীমা,পরকীয়া জানাজানির কারনেই কি খুন??

দুর্গাপুর :বাড়িতে ঢুকে ভর দুপুরে তিনজনকে খুন করল দুষ্কৃতী। অথচ বাড়িতে থাকা দুটি পোষ্য বিদেশি কুকুর কেন চিৎকার করল না? গত বছরের ১০ নভেম্বর পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুরের কাঁকসার সারদাপল্লির এই খুনের তদন্তে নেমে এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিলেন তদন্তকারীরা। তাহলে কি যে এসেছিল তাকে চেনে এই দুই সারমেয়? এই প্রশ্নের উত্তরেই লুকিয়ে ছিল সূত্র!শেষমেশ এই তিনজনের খুনের ঘটনায় ওই বাড়িতেই এতদিন থাকা খুন হওয়া সিমরনের কাকিমা রিঙ্কু বিশ্বকর্মাকে গ্রেপ্তার করল কাঁকসা থানার তদন্তকারীরা।ধৃতকে আজ দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাকে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। খুনের ঘটনার কয়েকদিন আগে সারদাপল্লির ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা সস্ত্রীক আসামে গিয়েছিলেন তাঁর বড় মেয়ের বাড়িতে। বাড়িতে ছিল ছোট মেয়ে সিমরন, ধনঞ্জয়ের শাশুড়ি সীতাদেবী এবং শ্যালকের ছেলে সনু বিশ্বকর্মা। তাঁদের শ্বাস রোধ করে খুন করা হয়। ধনঞ্জয়ের ভাই রাজু দাবি করেন, তিনি বিশেষ কাজে ইলামবাজারে গিয়েছিলেন। স্ত্রী রিঙ্কুর মুখে শোনেন, হেলমেট পরে বাইক নিয়ে কেউ এসেছিল ধনঞ্জয়ের বাড়িতে। আবার হেলমেট পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইক নিয়ে চলে যায়। এরপরেই রিঙ্কু গিয়ে দেখতে পান সিমরন এবং সীতাদেবীর দেহ পড়ে আছে দুটি বিছানায়। সোনুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে বাড়ির উঠোনে।মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বুধবার রিঙ্কুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রিঙ্কু সম্পর্কে সিমরনের কাকিমা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রিঙ্কুর একজনের সঙ্গে প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা সিমরন জানতে পেরে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, কাকিমার মোবাইলে বিশেষ ‘অ্যাপ’ ঢুকিয়ে দিয়ে কাকিমার গতিবিধি জানতে থাকে সিমরন। সেই কথা পরে জানতে পেরে যায় রিঙ্কু।সিমরনের দুটি মোবাইল ফোন খুনি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ আরো তীব্র হয় পুলিশের। সেই মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন করা ও একাধিক জনকে ধারাবাহিক জেরা, এমনকি ঝাড়খণ্ডেও এই খুনের হদিস পেতে হানা দেয় পুলিশ। তারপর পুলিশ নিশ্চিত হয় এই খুনের সঙ্গে কাকিমা যোগ রয়েছে। তারপর কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে জেরা করে এই খুনের কারণ জানতে পারে পুলিশ। খুনের প্রায় ছয় মাস আগে সিমরন কাকিমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের একাধিক নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফাঁস করে দেন পরিবারের মধ্যে। দিন রাত পুরুষ ঢুকছে কাকিমার ঘরে তার প্রতিবাদও করেছিলো সিমরন। তাই সিমরনকে চুপ করিয়ে দিতে খুন করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত বাকি দু’জনকেও সাক্ষী লোপাটের জন্য খুন করা হয় বলে পুলিশ মনে করছে। বুধবার ধৃতকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পাঠায় পুলিশ। বিচারক তাকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *